আমার স্টুডেন্ট আমাকে একবার প্রশ্ন করলো , আচ্ছা ভাইয়া , যে আমেরিকা পরমানু বোমা বানাতে পারে, রকেট বানাতে পারে, আধুনিক যুদ্ধ বিমান বানাতে পারে, তারা কি নিজেদের পোশাক, জামা কাপড় নিজেরা বানাতে পারে না ? এগুলো কেনার জন্য কেন থার্ড ওয়ার্ল্ড কান্ট্রি গুলোর দিকে যেতে হয় ? তারা কি এতোই অক্ষম ?
খুব বড় একটা ধাক্কা খেলাম ।
আসলেই তো !!
কি কারনে এমন করে ?
কয়েকদিন আগে ইরানের বিমান বাহিনীতে নতুন এক ধরনের ফাইটার বিমান কমিশন দেয়া হলো । বিমানটার নাম হইলো কাউসার । এটা ইরানের হোম মেইড জিনিস । ইদানীং আমেরিকা কেন জানি এই জিনিসের দিকে ঝুকে গেছে । তারা গবেষণা করে দেখছে ইরান কিভাবে এই জিনিস বানালো।
২০০০ সালে রাশিয়ায় কুরস্ক (Kursk) সাবমেরিন বিস্ফোরিত হয়েছিল । এই ঘটনায় প্রায় ১৮৩ জন রুশ নাবিক নিহত হয় । আঙ্গুল তোলা হইলো আমেরিকার দিকে । কিন্তু তদন্তে বেরিয়ে এলো ভিন্ন জিনিস । সাবমেরিনের ভেতরে হাইড্রোজেন পার অক্সাইডের রিএকশনে পরপর চারটা মিসাইল বিস্ফোরিত হয়ে পুরো সাবমেরিন ধ্বসে যায় । মারা যায় সবাই ।
এরপর থেকে রাশিয়া সিদ্ধান্ত নিলো তার সাবমেরিন প্রযুক্তি আরো উন্নত করবে । আজকের দিনে আমেরিকার থেকে ভালো মানের সাবমেরিন বানায় রাশিয়া ।
মূল প্রসঙ্গে আসি । তবে একটু ভিন্নভাবে ।
একটা ব্যাপার একটু খেয়াল করে দেখবেন থার্ড ওয়ার্ল্ড কান্ট্রির মানুষজন কি কি ব্যাপার নিয়ে রিএকশন দেখায় আর উন্নত বিশ্ব সেটাকে কিভাবে ইউজ করে ।
আমাদের হাতে ধরায় দেয়া হলো সেলাই মেশিন । তৈরি পোশাকে আমরা হইলাম টপার । আর ওরা হইলো টেকনোলোজিতে টপার ।
আমাদের ইউনিভার্সিটিতে ঢুকিয়ে দেয়া হলো ছাত্র রাজনীতি । এই পলিটিক্সে আমরাই সেরা । আর ওরা টপার হইলো মেধার চর্চায় ।
আমাদের কালচার হইলো স্যাটেলাইট কালচার । নিজেদের বলতে কিছুই নাই । আর তাঁদের কালচার দেখার জন্য বিশ্বব্যাপী চলে কম্পিটিশন ।
আমাদের ধর্মটাকে ইউজ করে আমাদেরকেই জঙ্গি বানিয়ে দেয়া হলো । এখন ধর্মের কথা শুনলেই লোকে কয় জঙ্গি ।
শত কোটি ডলার সাহায্যের নাম করে মাথায় চাপিয়ে দেয়া হলো অপরিশোধযোগ্য ঋণের বোঝা ।
আমাদের সৈনিকদের পাঠানো হয় শান্তি মিশনে । আর ন্যাটোর সৈনিকরা যায় দেশ দখল করতে । পার্থক্য বুঝা গেছে ?
ওদের ইউনিভার্সিটি গুলো প্রতি বছর টপ লিস্টে থাকে । আমাদের ইউনিভার্সিটি বিখ্যাত হয় রাস্তায় আন্দোলন করে ।
আমাদের আলোচনার বিষয়বস্তু জার্সির মধ্যে লাল কালার নাই কেন ? আর ওরা চিন্তা করে কোন ধরনের গাড়ি বানালে সেটা থার্ড ওয়ার্ল্ড দেশগুলোতে সব থেকে বেশি দামে বিক্রি করে লাভ করা যাবে ।
মেধা উন্মুক্ত হোক
শুরু হোক বুদ্ধির চর্চা ।
Arafat Abdullah (মধ্যরাতের অশ্বারোহী)
University Of Chittagong
Related Images:

মন্তব্য করুন