প্রাচুর্যের লালসা মানুষকে আখিরাত বিমুখ করে রেখেছে, অথচ তাকে অবশ্যই সব কিছু ছেড়ে পরপারে পাড়ি জমাতে হবে, অতঃপর তাকে দেওয়া সকল নেয়ামত সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হবে।
অথচ আমরা সে বিষয়ে কতটা গাফেল।
জীবনে প্রতিটি মুহূর্তে এমনকি মুমূর্ষু অবস্থাতেও দুনিয়ার প্রতি এ লালসায় পড়ে আছি আমরা।
এই প্রাচুর্য ধন-সম্পদ কতটুকুই বা কাজে আসবে সে-ই অনন্তকালের জীবনে কখনো কি ভেবেছি?
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেন : মৃত ব্যক্তির সাথে তিনটি জিনিস যায়, তার মধ্যে দু’টি ফিরে আসে, শুধু একটি সাথে থেকে যায়।
যে দু’টি জিনিস ফিরে আসে: আত্মীয়-স্বজন ও ধন-সম্পদ।
একটি জিনিস সাথে যায় তা হলো: আমল।
(সহীহ বুখারী হা. ৬৫১৪)
যে আমল হবে আমাদের একমাত্র সাথী সেই আমলের বেলায় আমরা কতো উদাসীন। আর দুনিয়ার ধন-সম্পদের পিছনে কত মরিয়া হয়ে ছুটছি আমরা। দুনিয়ার মহো এই লালসা এখানেই কি শেষ? মহান রবের সামনে দাড়াতে হবে না?
আমরা কেমন জানি গতানুগতিক চলাচল করি।
আল্লাহ তা’আলা কেন আমাদের মানুষ হিসাবে সৃষ্টি করলেন কেনই বা আমরা মানুষ হয়ে জন্মেছি।
কি তার উদ্দেশ্য? ভেবেছি কখনো?
আল্লাহ তা’আলা বলেনঃ
আর জিন ও মানুষকে কেবল এজন্যই সৃষ্টি করেছি যে তারা আমার ইবাদাত করবে। (আয-যারিয়াত-৫৬)
তারা একমাত্র আমারই ইবাদত করবে’ এটাই হলো মানব ও জিন জাতি সৃষ্টির একমাত্র লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য।
ইবনু আব্বাস (রাঃ) এ আয়াতের তাফসীরে বলেন :
অর্থাৎ আল্লাহ তা‘আলা তাওহীদ প্রতিষ্ঠা করার জন্য জিন ও মানব জাতি সৃষ্টি করেছেন। সুতরাং প্রত্যেক মানুষ ও জিন একমাত্র আল্লাহ তা‘আলার ইবাদত করবে, তাঁর সাথে কাউকে শরীক করবে না এটাই লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হওয়া উচিত। তবে মনে রাখতে হবে ইবাদত শুধু সালাত, সিয়াম, হাজ্জ ও যাকাতের মাঝে সীমাবদ্ধ নয় বরং ইবাদত একটি ব্যাপক নাম। প্রত্যেক কথা ও কাজ তা বাহ্যিক হোক আর আভ্যন্তরীন হোক যা আল্লাহ তা‘আলা ভালবাসেন তাই ইবাদত।
প্রিয় ভাই নিজেদেরকে নিয়ে একটু চিন্তিত হোন নিজেদের আমলের বিষয়ে মনোযোগী হোন।
কি করছি কিভাবে নিজেদের সময় গুলো ব্যয় করছি? আল্লাহ তা’আলার কাছে কি বা জবাব দিবো একটু ত ভাবুন।
বিনিময়ে আল্লাহ তা’আলা আমার আপনার জন্য যা রেখেছেন।
আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, ‘মহান আল্লাহ বলেছেন, আমি আমার নেককার বান্দাদের জন্য এমন জিনিস তৈরি করে রেখেছি, যা কোন চক্ষু দেখেনি, কোন কান শুনেনি এবং যার সম্পর্কে কোন মানুষের মনে ধারণাও জন্মেনি। [সহিহ বুখারী, হাদিস নং ৩২৪৪]