যুগে যুগে বহুবার ভাইরাস এসেছে এবং মানব সভ্যতাকে আতঙ্কিত ও স্থবির করে দিয়ে গেছে। তারপরও আমাদের টনক নড়েনি, টনক নড়েনি বিশ্বের পরাক্রমশালী শাসক ও নীতিনির্ধারকদের। ১৯১৮ স্প্যানিশ ফ্লু’তে ২৬৩ দিনে বিশ্বের ৩ কোটি ৩৩ লাখ মানুষ মারা গিয়েছিল। এখন করোনা সারা বিশ্বকে কাঁপাচ্ছে।
ক্ষুদ্র একটি রাসায়নিক উপকরণ, যা ইলেকট্রন মাইক্রোস্কোপ ছাড়া খালি চোখে দেখা যায় না, তার নাম ভাইরাস। এই অদৃশ্য রাসায়নিক উপকরণটিকে মোকাবেলা করার জন্য, শনাক্ত ও প্রতিরোধ করার জন্য এবং পরাস্ত করার জন্য বিশ্বের কোনো দেশ বা শাসক যথাযথ মনযোগ দেয়নি বা অর্থ বিনিয়োগ করেনি।
অথচ বিশ্বের ক্রিমিনাল রাস্ট্রনায়ক ও তাদের অনুসারীরা প্রতি বছর ট্রিলিয়ন ট্রিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করে ধ্বংসাত্মক মারণাস্র উৎপাদন, বিক্রি ও প্রয়োগ করে পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে শিশু-নারীসহ লাখোকোটি নিরীহ মানুষকে হত্যা করছে।
আজ করোনাভাইরাসের ভয়ে বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাধর প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প থেকে শুরু করে সবচেয়ে বেশি অস্র আমদানিকারক বিশাল ক্ষমতাবান ও ধনবান প্রিন্স পর্যন্ত ভয়ে কাঁপছে। কেন বাবারা, তোমরা তোমাদের এটম বোমা মেরে নিমিষেই লাখো মানুষ, ধনসম্পদ ধ্বংস করতে পার, তোমাদের ট্রিলিয়ন ট্রিলিয়ন ডলারের মারণাস্ত্র ও এটম বোমা ফাটিয়ে দাও না করোনা ভাইরাসটিকে এক নিমিষে চিরতরে উড়িয়ে। পারছ না। পারবে না। পারছ না শুধু, তোমরা শেয়াল কুকুরের মতো পালাচ্ছ আর লুকিয়ে থাকাটাকে নিরাপদ মনে করছ।
বিশ্বের সব ক্রিমিনালদের বলছি, সাময়িক পালিয়ে ও লুকিয়ে, রুদ্ধঘরে আবদ্ধ থেকে পার পাবে না। করোনা নতুন রুপে, নতুন আঙ্গিকে, নতুন পরাশক্তি নিয়ে আবার আসবে এবং তোমাদের আমাদের তাড়িয়ে বেড়াবে, কাউকে ছাড়বে না। এখনো সময় শেষ হয়ে যায়নি। কোটি কোটি টাকার মারণাস্ত্র না বানিয়ে ও না কিনে সেই টাকা বিনিয়োগ করে ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস প্রতিরোধসহ সব ধরনের রোগ ঠেকাও, পর্যাপ্ত চিকিৎসক তৈরি কর, হাসপাতাল বানাও, স্বাস্থ্যসেবাকে উন্নত কর।
আমাদের মতো দেশগুলো আরো খারাপ। খাওয়ার পয়সা জোটে না, ওষুধপথ্যের জন্য বরাদ্দ নেই, পর্যাপ্ত ভালো চিকিৎসক নেই, সর্বসাধারণের জন্য হাসপাতাল নেই, ভাইরাস শনাক্তকরণের সাজসরঞ্জাম নেই, অথচ প্রতিবছর কোটি কোটি টাকার মারণাস্ত্র কেনা ও আতশবাজি পোড়ানো ও বিলাসিতার জন্য টাকা ঢালছে। একেই কী বলে গরিবের ঘোড়া রোগ।
বড় কষ্টে আছি, চিন্তায় আছি, আমার জন্য, আপনার জন্য, মানুষের জন্য এবং সারা বিশ্বের সব অসহায় নিরীহ মানুষের জন্য। কিন্তু ক্রিমিনালরা কি এসব কথা ভাবে, না বুঝে?
Muniruddin Ahmed
Professor and Head
Department of Pharmacy
Daffodil International University
Former Pro-VC, East West University
Former Dean, Faculty of Pharmacy at University of Dhaka
Related Images:
