“….ইতালির ঘটনার জের টেনে আমাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রবাসীদের সম্পর্কে ঢালাওভাবে একটি মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, বিদেশ থেকে ফিরে প্রবাসীরা ‘নবাবজাদা’ হয়ে যান। তাঁর মন্তব্যে অনেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। তাঁদের মূল বক্তব্য হচ্ছে প্রবাসীরা ‘নবাবজাদা’ই, তাঁরা নবাবজাদার মতো ব্যবহার পাওয়ার যোগ্য। আমি নিজে লিখেছি নবাবজাদা হওয়া হারামজাদা হওয়ার চেয়ে অনেক ভালো। প্রবাসীরা বিদেশে কষ্ট করে টাকা পাঠিয়ে দেশটাকে টিকিয়ে রেখেছেন। আর হারামজাদারা দেশ থেকে টাকা পাচার করে দেশের বারোটা বাজাচ্ছে। আমার দুঃখ হচ্ছে, হারামজাদারা এ দেশে পায় ভিআইপি মর্যাদা আর প্রবাসীরা পান তুচ্ছতাচ্ছিল্য, অপমান, অবমাননা।
কিছু প্রবাসী প্রশ্ন তুলেছেন আরও বিভিন্ন মৌলিক বিষয়ে। তাঁরা রাতের ভোট, লাখো কোটি টাকা পাচার, গুম-খুন, সাবেক প্রধান বিচারপতির পরিণতি, বিচার বিভাগ, আর্থিক খাত, শিক্ষাব্যবস্থাসহ বহু উদাহরণ টেনে দেশের সিস্টেম নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। প্রশ্ন তুলছেন বিদেশে বাংলাদেশের রাজনীতিবিদদের সন্তানদের পোরশে, বিএমডব্লিউ গাড়ি চালানো নিয়ে, অকাতরে তাঁদের টাকা ছড়াতে দেখে। জানতে চেয়েছেন এসব কোন সিস্টেমের লক্ষণ?
প্রবাসীরা নিজেদের স্বজন আর দেশকে ভালোবেসে কষ্টের টাকা পাঠান দেশে। তাঁদের সেই রেমিট্যান্সেই আসলে টিকে আছে এ দেশ। তাঁদের প্রশ্ন, সেই প্রবাসীদের যখন পাসপোর্ট নিতে গেলে টাকা দিতে হয়, এয়ারপোর্টে হয়রানি করা হয়, ব্যাগ ধরে টানাটানি করা হয়—এটা কেমন সিস্টেম?
তাঁরা সবচেয়ে বেশি প্রশ্ন তুলেছেন করোনা নিয়ে আমাদের প্রস্তুতিতেও। প্রশ্ন তুলেছেন আমাদের সিস্টেম নিয়ে, করোনা মোকাবিলায় সেই সিস্টেমের অপ্রতুল, করুণ ও হাস্যকর অবস্থা নিয়ে। আমরা কি এখন একটু সৎভাবে আত্মবিশ্লেষণ করতে পারি এটি নিয়ে?”
— অধ্যাপক আসিফ নজরুল
Related Images:
