আবেগ দিয়ে উৎসাহ উদ্দিপনা বৃদ্ধি পায় কাজে জোর আসে, কিন্তু বিবেক দিয়ে তা সম্পাদন করতে হয়!
ধর্মীয় মূল্যবোধে আঘাত, কোরআনের অবমাননা আমাদের ব্যথিত করে। আমাদের হৃদয়ে রক্ত ক্ষরণ হয়। কিন্তু এর জবাবে আমাদের কী করা উচিৎ। ওদের গর্দান ফেলে দেয়া? প্রতিমা ভাঙচুর করা? ওদের ঘর বাড়িতে আগুন দেয়া?
উত্তর খোঁজার জন্য চলুন একটা হাদিস দেখি –
- আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, একদিন এক বেদুইন দাঁড়িয়ে মসজিদে প্রস্রাব শুরু করল। উপস্থিত লোকজন দেখে তাকে বাধা দিতে যাচ্ছিল। কিন্তু প্রিয় নবী (সা.) তাদের বললেন, ওকে ছেড়ে দাও। ওর প্রস্রাব শেষ হলে এক বালতি পানি ঢেলে দিয়ো। (বুখারী-২১৯)
এটা রাসূলের সামনে জঘন্য অপরাধ ছিলো না? রাসূল কি তার গর্দান ফেলে দিয়েছেন? না! তা করেননি বরং তিনি বলেছেন-
- নিশ্চিতভাবে জেনে রেখো, তোমাদের সহজ ও বিনয়ী আচরণ করার জন্য পাঠানো হয়েছে, কঠোরতা বা উগ্রতার জন্য পাঠানো হয়নি। (বুখারী-২২০)
তাহলে আপনি কেন ওনাদের প্রতিমা ভাঙতে যাবেন? কেন ধ্বংসযজ্ঞ চালাতে যাবেন?
আপনি কি রাসূলের চেয়েও বড় ধর্মপ্রচারক হয়ে গেছেন?
প্রশাসনকে জানান। পারলে আপনার জায়গা থেকে প্রশাসন কে সাহায্য করুন। আর বাকিটা আল্লাহর উপর ছেড়ে দিন। কারণ আল্লাহ বলেছেন,
- নিশ্চয়ই আমিই কোরআন নাজিল করেছি এবং অবশ্যই আমিই তা সংরক্ষণ করব।
(সুরা-১৫ [৫৪] হিজর, আয়াত: ৯)
বিঃদ্রঃ আবেগ দিয়ে ধর্ম চালাতে গিয়ে নিজ ধর্মকে অন্যের কাছে কলুষিত করবেন না। আপনার নবী আপনাকে কোমলতা শিখিয়ে গিয়েছেন।
কোন মন্দিরে হা*ম*লা তো বহুদূর, মূর্তিকে গালি দেওয়া পর্যন্ত ইসলামে নিষেধ করেছে।
আল্লাহ্ তায়ালা বলেন,,,
وَلَا تَسُبُّوا الَّذِيْنَ يَدْعُوْنَ مِنْ دُوْنِ اللّٰهِ فَيَسُبُّوا اللّٰهَ عَدْوًا بِۢغَيْرِ عِلْمٍ
‘হে ঈমানদারগণ! তারা আল্লাহকে বাদ দিয়ে যেসব দেবদেবীর পূজা-উপাসনা করে, তোমরা তাদের গালি দিও না। যাতে করে তারা শিরক থেকে আরো অগ্রসর হয়ে অজ্ঞতাবশত আল্লাহকে গালি দিয়ে না বসে।
(সূরা আনআম: ১০৮)
বিশ্বনবী (সা.) বলেন, ‘
কোনো মুসলমান যদি ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের অধিকার ক্ষুন্ন করে কিংবা তাদের ওপর জুলুম করে, তবে কেয়ামতের দিন আমি মুহাম্মদ ওই মুসলমানের বিরুদ্ধে আল্লাহর আদালতে লড়াই করব। ’
(সুনানে আবু দাউদ : ৩০৫২)
নবী (সা.) আরও বলেন, ‘
অন্যায়ভাবে কোনো অমুসলিমকে হত্যাকারী জান্নাতের সুঘ্রাণও পাবে না। অথচ চল্লিশ বছরের রাস্তার দূরত্ব থেকেই ওই ঘ্রাণ পাওয়া যাবে। ’
(সহিহ বোখারি : ৩১৬৬)
বিশ্বনবী সা: বলেন,
যুদ্ধকালীন সময়ে বা যুদ্ধের পর কোনো মন্দির-গীর্জা-উপাসনালয় ভেঙে ফেলবে না।
(মুসান্নাফ আবি শায়বা : ৩৩৮০৪)
মুহাম্মদ (সা.) আরও বলেন,
যারা মানুষকে সাম্প্রদায়িকতার দিকে ডাকে, সাম্প্রদায়িকতার জন্য যুদ্ধ করে, সংগ্রাম করে এবং জীবন উৎসর্গ করে তারা আমাদের দলভুক্ত নয়।
(সুনানে আবু দাউদ : ৫১২৩)
উস্কানীতে পা দেবেন না। আগে পবিত্র কোরআন, হাদিছ জানুন, পড়ুন, সঠিক ব্যাখ্যা বুঝুন। ধর্মীয় উগ্রবাদ কখনোই ইসলাম সমর্থন করেন না।
Related Images:
