জীবনে সুখী হওয়াটা অনেকটা মানসিকতার উপর নির্ভর করে। বিবাহিত জীবনটা পুরোটাই চলে বিশ্বাসের উপর। আর এই সম্পর্কে স্বচ্ছতা থাকা জরুরি। তবে অতীতে কারও সঙ্গে (শারীরিক) সম্পর্কের কথা জানানোটা কতটুকু যুক্তিসঙ্গত?
যদিও সিদ্ধান্তটা পুরোপুরি ব্যক্তিগত এবং এর ভালো বা খারাপ দুই দিকই আছে।
বিবাহিত জীবনের প্রথম কয়েক মাস কিংবা কয়েক বছর হয়তো আনন্দ ফুর্তিতে কেটে যায়। এক সাথে চলার পথে মতের অমিল, বাধা-বিপত্তি, তর্ক-বিতর্ক হতেই পারে। মিথ্যা বলা বা সত্য গোপন করার ফল কখনো ভালো হয় না। এগুলো পারস্পরিক বিশ্বাসে ঘুন ধরায়। তাই সেই সম্ভাবনাকে দূর করে দেয়াই ভালো। তবে অপরপক্ষের অতীতকে মেনে নেয়ার মানসিকতা আছে কিনা বুঝতে হবে।
কেউ যদি নিজে থেকে অতীত সম্পর্কের কথা বলে, অতীত গোপন না করে, তাহলে তাকে সত্যবাদী আখ্যায়িত করা যায়। তবে সে অতীত সম্পর্কের অপ্রীতিকর পরিণাম থেকে বেরিয়ে আসতে পেরেছে কিনা সেটা ভেবে দেখবার বিষয়। অতীত সম্পর্কের ভূত তাড়া করে বেড়ালে, বর্তমান সম্পর্ক কখনো সুখের হয় না।
আর কেউ যদি চেপে গিয়ে থাকে ও আপনি অন্য কোনভাবে জানতে পারেন, তবে ভেবেচিন্তে এগোনো ভাল। হয়তো সে আপনাকে বিশ্বাস করে বলতে পারেনি অথবা বলা প্রয়োজন বলে মনে করেনি।
যদি আপনাকে সে অতীতের শারীরিক সম্পর্কের কথা বিশ্বাস করে বলতে না পারে, তাহলে হয়ত সে আপনার চরিত্রের বিচারিক দিকটার কথা জানে। হয়ত সে আশঙ্কা করছে আপনি এ নিয়ে তার চরিত্রের কাটাছেঁড়া করবেন। হয়ত সে আপনাকে হারাতে চায় না। আর আপনার জীবনসঙ্গী বা জীবনসঙ্গীনি যদি আপনাকে বিশ্বাস করতে না পারেন তবে সেটা আপনার-ই ব্যক্তিত্ত্বগত সমস্যা।
আর যদি সে আপনাকে সবকিছু খোলাখুলিভাবে জানানোর প্রয়োজনবোধ না করে থাকেন, তবে তো সম্পর্কের শুরুটাই মিথ্যা দিয়ে শুরু। সে রকম সম্পর্কে কি সুখ আছে?
দৈহিক সম্পর্ক ভালোবাসার চরম ও অবশ্যম্ভাবী পরিণতি। ভালোবাসাবিহীন শারীরিক সম্পর্ক সবার মানসিকতা ও রুচির সাথে যায় না। কোন পুরুষ বা নারী তার শরীর সমন্ধে কি নির্নয় করবেন সেটা তার একান্ত ব্যক্তিগত ব্যাপার।
স্বামী-স্ত্রী একে ওপরের সহযোদ্ধা, জীবনসঙ্গী-জীবনসঙ্গীনি। স্বামী স্ত্রীর সতীচ্ছেদ করেছেন কিনা সেটার থেকে বিশ্বাস, ভালোবাসা ও মর্যাদার সাথে বাকি জীবনটা দুজনে একসাথে কাটাতে পারবেন কিনা, সেটা বেশি গুরুত্বপূর্ণ। আর স্ত্রীর জীবনে প্রথম পুরুষ হওয়ার থেকে অন্তিম পুরুষ হওয়াটা বেশি জরুরি।
জীবনসঙ্গী যদি আপনার অতীত মেনে নেন তবে বুঝতে হবে, একজন ভালো মানুষকেই জীবনসঙ্গী হিসেবে পেয়েছেন।
Related Images:

মন্তব্য করুন